সোমবার, ৫ই মে, ২০২৪ ইং, রাত ৪:৪১
শিরোনাম :

বরিশালে শোকাবহ আগস্ট স্মরণে দোয়া ও স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:শোকাবহ আগষ্টের কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বরিশাল জেলা প্রশাসন এর আয়োজনে বরিশালের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।আজ শনিববার সকাল ১১টায় নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এ দোয়া মোনাজাত, স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বরিশালের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৩০ হাজার আমন্ত্রিত অতিথিদের অংশ গ্রহনে এই সভার আয়োজন করেছেন জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক এস.এম অজিয়র রহমানের সভাপতিত্বে উক্ত স্মৃতিচারণমূলক সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক (মন্ত্রী) ও শহীদ আঃ রব সেরনিয়াবাতের জেষ্ঠ্য পুত্র আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ।

স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানে গেষ্ট অব অনার ছিলেন পানিসম্পদ প্রতি মন্ত্রী ও বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম।

প্রধান আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শহীদ আঃ রব সেরনিয়াবাতের আহত পুত্রবধূ ও বরিশাল জেলা শাখা মহিলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি সাহান আরা বেগম।

মূখ্য আলোচক হিসাবে বক্তব্য রাখেন গুলিবিদ্ধ সাহান আরা বেগমের কোলে থাকা দেড় বছরের শিশু সন্তান ও বর্তমান বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহাজোটের সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, সংসদ সদস্য বেগম নাসরিন জাহান রত্না আমিন ও সংরক্ষিত সংসদ সদস্য এ্যাড. রুবিনা আক্তার মিরা।

আরও উপস্থিত ছিলেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ ইয়ামিন চৌধুরী,বরিশাল রেঞ্জ ডি.আই.জি মোঃ শফিকুল ইসলাম, বিপিএম,পিপিএম (বার),বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম (বার),বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক সাবেক সংসদ এ্যাড. তালুকদার মোঃ ইউনুস,বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি সুপ্রিম কোর্ট বার সদস্য এ্যাড. গোলাম আব্বাস চৌধূরূ দুলাল, সাধারন সম্পাদক এ্যাড.একেএম জাহাঙ্গির হোসাইন।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান,ইউপি চেয়ারম্যান,শিক্ষক-শিক্ষিকা-ছাত্র-ছাত্রী,সুশিল সমাজ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও নগরের জন প্রতিনিধি সহ ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কালো রাতে ঘাতকদের বুলেটে আহত ও আহতদের পরিবার সদস্য সহ বিভিন্ন জেলা উপজেলা নেতৃবৃন্দ।

এসময় স্মৃতিচারণমূলক সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে শাহান আরা বেগম বলেন সে দিনের সেই স্মৃতি আজও আমাকে কাঁদায়। এক মুহুর্তের জন্য সে দিনের সেই নির্মম সেই হত্যাকাণ্ডের কথা ভুলতে পারিনা।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের সেই নির্মম হত্যাকাণ্ড চালানোর সময় আমার গায়ে ৩টা গুলি লাগে যা এখনও আমি শরীরে বহন করে চলছি। হত্যাকারীদের গুলিতে আমর শিশু সন্তান সুকান্ত বাবু মারা গেলেও আমার কোলে থাকা আজকের বরিশালি সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বেঁচে যায়। আমার গায়ে গুলি লাগায় আমি রক্তাক্ত হয়ে পড়ে থাকার কারনে হত্যাকারীরা বুজতে পেরেছিলো আমি মারা গেছি। কিন্তু আপনাদের দোয়ায় আমি আজও বেঁচে আছি। বেচে আছে আমার সন্তান সাদিক আবদুল্লাহ।

এসব কথা বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। দীর্ঘ সময় বক্তব্য থামিয়ে কান্না শেষ করে আবার বক্তব্য শুরু করেন। আবার কাঁদেন। কান্না যেন থামাতে পারছিলেন না তিনি। তার কান্না দেখে উপস্থিত সকলের চোঁখ থেকে পানি পড়তে শুরু করে। উপস্থিত কেউই চোঁখের পানি ধরে রাথতে পারলেন না। সবাই যেন স্তব্ধ হয়ে গেছিলেন। কোন সাড়া শব্দ ছিলোনা।এমন নির্মমতার কথা যেন এর আগে কখনও কেউ শোনেন নি।